Jan 12, 2023

প্লটুন ব্রিজের নিকুঞ্জ মোহন (শেষ অংশ )।

সেইদিনই ম্যাজিস্ট্রেটের অর্ডার বেরিয়ে গেল । ইংরেজ ভদ্রলোক বেকসুর খালাস পেলেন । উল্টে নিকুঞ্জ মোহন কে দোষারোপ করে বলা হল, ইংরেজ ভদ্রলোক একজন সম্ভ্রান্ত ব্যাক্তি, তিনি টোল না দিয়ে চলে যাবেন এতটা অভদ্র নন। বরঞ্চ নিকুঞ্জ মোহন টোল নিতে দেরি করায় ভদ্রলোক অধৈর্য হয়ে পড়েছিলেন। শুধু তাই নয় ২রা এপ্রিলের অর্ডারের পরিপ্রেক্ষিতে ৪ঠা এপ্রিল লিখিত নির্দেশ দিলেন ব্রিজ পুলিশের ইন্সপেক্টরকে। ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ব্রিজ দিয়ে যাতায়াতকারী কোন দেশীয় অথবা ইউরোপিয়ান যদি টোল দিতে ভুলে যায় সে ক্ষেত্রে তাদের গ্রেপ্তার করা যাবে না যদি সে তার নাম ও ঠিকানা দেয়। আর বিশেষত যদি সেই ব্যক্তি ইউরোপিয়ান হয় আর  সে তার নাম ও ঠিকানা নাও দেয়, সেক্ষেত্রে তাকে তো গ্রেপ্তার করা যাবেই না এবং ইন্সপেক্টর এসে চেষ্টা করবে সেই ইউরোপিয়ান ব্যক্তির নাম ঠিকানা জানার এবং দেশীয় অথবা ইউরোপিয়ান সমস্ত পদযাত্রীদের কাছ থেকে খুব সম্মানের সঙ্গে টোল আদায় করতে হবে ।

ঘটনা গড়ালো ব্রিজ কমিশনারের তথা পোর্ট কমিশনারের ভাইস চেয়ারম্যান ব্রুস সাহেব অবধি। বাবু নিকুঞ্জ মোহন বসু লিখিতভাবে জানালেন যে তিনি টোল নিতে অহেতুক কোন দেরি করেনি বরঞ্চ সেই ইংরেজ ভদ্রলোককে দেখা মাত্রই টোল চেয়েছিলেন। তিনি ভদ্রলোকের গাড়ির পেছনে ছোটেন টোল আদায়ের জন্য। গাড়ি না থামালে ফিরে আসেন এবং ব্রিজ পুলিশের ইন্সপেক্টর কে ঘটনাটার কথা জানান। খুব দুর্ভাগ্যের যে ম্যাজিস্ট্রেট তার কোন জবানবন্দি নেননি, যদিও তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন । এই চিঠিকে মান্যতা দিয়ে ব্রিজ পুলিশের ইন্সপেক্টর পেরিরা জানালেন যে টোল নিতে  দেরি করার কোন ঘটনা ঘটেনি এবং ম্যাজিস্ট্রেট ইংরেজ ভদ্রলোকের একতরফা বক্তব্য শুনে তিনি তার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যদিও যথেষ্ট প্রমাণ তার বিপক্ষে ছিল। সবদিক  বিবেচনা করে ব্রুস সাহেব সিদ্ধান্ত নেন যে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ অ্যাক্ট নাইন ১৮৭১-র পরিপন্থী এবং ম্যাজিস্ট্রেট এই ধরনের কোন নির্দেশ সরাসরি কোন কর্মচারীকে দিতে পারেন না । অতঃপর হাওড়া ব্রিজ কমিশনার ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ নাকচ করেন।

সেই ইংরেজ ভদ্রলোক ছিলেন ১৪তম রেজিমেন্ট, দমদম এর জি ই ম্যাংগ্লেস ।


সমাপ্ত

0 comments: