Rangoon Passenger Shed and Babu Mukhram Kanoria

How Babu Mukhram Kanoria came forward to built 'Rangoon Passenger Shed' for fellow Indian.

প্লটুন ব্রিজের নিকুঞ্জ মোহন

An incident happened on Floating Howrah Bridge on 1877.

Champatala Ghat

Read full story on Champatala Ghat.

Refuge House of Kolkata Port

At the mouth of Sundarban, Kolkata Port established some shelters for Sea wrecked, Known as Refuge House.

'Bandel Survey' : A legacy of Colonial India

WB Survey Institute: legacy of a British colonial survey institute through an unique history.

Jun 29, 2018

Moyapur Magazine ময়াপুর বারুদ ঘর 2nd Part


2

১৮৭৩ সালের ১৫ঐ  জুলাই ফোর্ট ওইলিয়াম এর ওথেলো নামক  জাহাজ প্রায় ৪৭ বাক্স বিস্ফোরক ও অস্ত্রশস্ত্র বোঝাই হয়ে কোলকাতা বন্দরে ঢুকল । গান পাওডার  নিয়ম না মানার জন্য বন্দর  কর্তৃপক্ষ জাহাজ মাস্টার কে অভিযুক্ত করলেন । কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট জাহাজ মাস্টার কে অভিযোগ থেকে মুক্তি দিলেন এই বলে যে Act XXII of 1855-র অধিনিয়ম ৩৫ অনুসারে, সরকারী জাহাজের  বিস্ফোরক নিয়ে বন্দরে ঢোকার ছাড় আছে । তখন পোর্ট কমিসনারের  ভাইস চেয়ারম্যান W.D.Bruce বেঙ্গল গভর্নমেন্টের সেক্রেটারি কে এই অধিনিয়ম ৩৫ বিলোপ করতে অনুরোধ  বললেন । তিনি লিখলেন  জীবন ও বন্দরের নিরাপত্তার  জন্য যখন একটি  সাধারন জাহাজ, নিয়ম মেনে ময়াপুর ম্যাগাজিনে বারুদ  রেখে অল্প পরিমান বারুদ  নিয়ে  বন্দরে আসছে, সেখানে একটি সাধারন জাহাজে বিস্ফোরক বোঝাই করে সরকারী জাহাজ কি ভাবে  বন্দরে আসতে পারে। এই ব্যতিক্রমের অবসান হওয়া উচিত । চিঠির  উত্তরে জুনিয়র সেক্রেটারি H.J.S. Cotton জানালেন যে অধিনিয়ম ৩৫এর বিলোপ বাস্তব সম্মত ভাবে সম্ভব নয় । সঙ্গে এ ও জানালেন লেফটেনান্ট  গভর্নর  মিলিটারি ডিপারমেন্ট কে পরামর্শ দিয়েছেন যতদূর সম্ভব  সরকারী গোলা বারুদ কোলকাতা বন্দরের পরিবর্তে গার্ডেনরিচে নামাতে ।

Act XXII of 1855-র কথা যখন উঠলো , Act XXII তে গান পাওডার সংক্রান্ত কি কি নিয়ম ছিলও একটু সংক্ষেপে  বলা যাক ,

রকেট ও অন্যান্য বিস্ফোরক অস্ত্রশস্ত্র কে গান পাওডার হিসাবে  ধরা  হবে । প্রাদেশিক সরকার  গান পাওডার নামাবার জন্য  একটি স্থান ঠিক করে দেবেন, সমস্থ আগমনকারী  ও বহির্গমনকারী  ভেসেল কে নির্দিষ্ট  নিয়ম ও  ঠিক করে দেওয়া সময়  মেনে গান পাওডার  জমা দেওয়া ও ফেরত  নেওয়া  করতে হবে ।  জাহাজ মাস্টার কে একটি মুচলেকা দিতে হবে যে নির্দিষ্ট  সীমার  বেশি গান পাওডার তাঁদের জাহাজে নেই ।  গান পাওডার জমা  রাখলে ম্যাগাজিন অফিসার একটি রসিদ দেবেন ও জাহাজ মাস্টারের কাছে দায়বদ্ধ  থাকবেন জমা রাখা গান পাওডার ফেরত দেবার জন্য । নিয়ম ভঙ্গকারী দের ২০০ টাকা পর্যন্ত  জরিমানা ও জাহাজে প্রাপ্ত সমস্ত গান পাওডার বাজেয়াপ্ত করা হবে । সংকটের সংকেতে ব্যাবহৃত গান পাওডার সমেত একটি বন্দুক ছাড়া  বন্দরে কোনও বন্দুক, গাদাবন্দুক ওঠা নামানো করা যাবে না  যদি না প্রাদেশিক সরকারের অনুমতি থাকে ও নিয়ম ভঙ্গকারী দের ৫০ টাকা পর্যন্ত  জরিমানা হতে পারে । 

২০১০ সাল । ময়াপুর ম্যাগাজিন ।  ডান দিকে
চৌকি ঘর । মধ্যে বারুদ্ঘর। ঘিরে থাকা
সীমানা প্রাচীর 

ম্যাগাজিন অন্দর এখন যেমন 

মেসার্স রড্ডা অ্যান্ড কম্পানী  যারা কোলকাতা থেকে অস্ত্রসস্ত্র বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করতো , ১৭ঐ এপ্রিল ১৮৭৪ সালে কলকাতা পোর্ট কমিসনারকে চিঠি   লিখলেন  যে  ৫ পাউন্ড গান পাওডার রাখার নতুন এর নিয়ম percussion cap এর  ক্ষেত্রেও   প্রযোয্য   কিনা।  কারন  তাঁরা মেসার্স  মাকিননন  মাকিঞ্জী অ্যান্ড কম্পানী  কে percussion cap এর একটি ছোট  বাক্স রেঙ্গুন  এ পাঠাবার  নির্দেশ দিতে তাঁরা ৫ পাউন্ড গান পাওডার রাখার নতুন এর নিয়মের জন্য  তা পাঠাতে  অসম্মত হয় । মেসার্স  রড্ডা অ্যান্ড কম্পানী  জানতে চান  যেহেতু এগুলো  percussion cap  তাই গান পাওডার এর ৫ পাউন্ড  এই  নতুন  নিয়ম এতে প্রযোয্য  কিনা । উত্তরে পোর্ট কমিসনারের সেক্রেটারি G.H.Simpson জানান  এই নিয়ম combustible ammunition এর জন্য , percussion cap যদি combustible ammunition না হয় তাহলে নতুন নিয়ম প্রযোয্য নয় ।

কোলকাতা বন্দরে আগত জাহাজের অপ্রয়োজনীয়  দেরী এড়াতে জাহাজ মাস্টারকে ময়াপুর ম্যাগাজিন নজরে এলেই জাহাজের মাথায় একটি পতাকা লাগাতে হত যাতে ম্যাগাজিন কীপার আগে থেকেই পাওডার বোট ও কুলি নিয়ে তৈরি থাকতে পারেন । রাত্রি বেলায় গান পাওডার দেওয়া নেয়য়ার কাজ হত না। আবহাওয়া বা অন্যান্য সঙ্কটের কারনে যদি গান পাওডার ম্যাগাজিনে জমা না করা যায় , তাহলে সেই জাহাজ কে মেটিয়াব্রুজ ঘাটের আর পরে আসতে দেওয়া হত না ।

একটি সুদীর্ঘ ইতিহাসের এটি কয়েকটি পাতা মাত্র । কোলকাতা বন্দর এর বেড়ে উঠা, তার বিবর্তন ,  বিকাশ এর সাথে এই ম্যাগাজিন ওতপ্রোত ভাবে জড়িত । কোলকাতা বন্দরের  ইতিহাস উদ্যোগ  সাম্প্রতিক প্রচেষ্টার সাথে এই ম্যাগাজিন কে যুক্ত করলে  বন্দর তথা কলকাতার   ইতিহাসের একটি অংশ রয়ে যাবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মর  কাছে ।  

সমাপ্ত

Information Sources : 
O’Malley, L.S.S. - Bengal District Gazetteers: 24-Parganas (Bengal Secretariat Book Depot, 1914)
Documents of KoPT.

More Stories on Moyapur MAgazine :
Achipur Barood Ghar
Forgotten History: The Gunpowder Magazine of Achipur



Jun 15, 2018

Moyapur Magazine ময়াপুর বারুদ ঘর




১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজদোল্লার আক্রমনের ফলে ওল্ড ফোট পতনের  পর  রবার্ট ক্লাইভ তার পদাতিক সৈন্য বাহিনী নিয়ে এগিয়ে আসছেন কলকাতা পুনরুদ্ধার করতে  । এদিকে ওয়াটসন ও  অন্যান্য  সেনাপতি দের নেতৃত্বে  নৌবাহিনী সাথে সাথে চলছে কলকাতার উদ্দেশে । ১৭৫৬ সালের ২৮সে ডিসেম্বর তাঁরা এসে একসাথে মিলিত হলেন  বজবজ এর ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে ময়াপুরে । সেখানেই ঠিক হল কলকাতা আক্রমনের ব্লুপ্রিন্ট। কালে কালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গড়ে তুলল তাঁদের সাম্রাজ্য । কোলকাতা বন্দরের বিবর্তন পরিবর্ধন হল  কোম্পানির হাতে ।  জীবন , সম্পত্তি ও নিরাপদ বন্দর এর জন্য তাঁরা ময়াপুরে গড়ে তুললেন একটি বারুদঘর । তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ২০০  বছরেরও আগে থেকে এর ব্যবহার শুরু হয় ।  


ময়াপুর জায়গাটা বজবজের  দক্ষিণে , বর্তমান বজবজ বিরলাপুর জূট মিল এর খুব কাছেই । কলকাতা থেকে দূরত্ব বড়জোর ৩০ কিমি.র আশেপাশে । হুগলী নদী বাঁধের ঠিক পাশেই ময়াপুর ম্যাগাজিন এর প্রধান গুদামঘর ।গঙ্গার ধারে বিশাল একটি ফাঁকা জায়গা ।  এর পরিধি প্রায় ২৩ একর জুড়ে বিস্তিত ।  খুব পুরানো একসঙ্গে লাগোয়া দুটি চারচৌকো গুদামঘর । এটিকে ঘিরে চারচৌকো দ্বিস্তর সীমানা প্রাচীর । চারটি কোনে চারটি চৌকি ঘর । এর পশ্চিমে নদীর ধারে প্রায় ১৩৭ গজ দূরে ছিল অপেক্ষাকৃত ছোট  ক্র্যাকর গুদামঘর । এখন আর এটি অবশিষ্ট নেই । ম্যাগাজিন এর উত্তরে ছিল ম্যাগাজিন কীপার এর  দুতলা বাসস্থান । ছাদ হীন অবস্থায় এটি আজও বর্তমান । এর পূর্বে ছিল গার্ড এর বাসস্থান। বাকিটা ফাঁকা জায়গা । চারপাশে বিশাল বিশাল গাছ ।  আর এই পুরো বাবস্থাটি ছিল নদী বাঁধ দিয়ে ঘেরা । যাতে নদীর জল কোনও ভাবেই ম্যাগাজিনে প্রবেশ করতে না পারে । ভাঙ্গাচোমা গুদামঘর, ঘর বাড়ি কালের গর্ভে আস্তে আস্তে বিলীয়মান। কখনো কখনো সেই পুরানো বারুদঘর এর সামনে  দাঁড়িয়ে অনুভব করতে চেয়েছি সেই কর্মব্যস্ত  দিন গুলো কে । নাহ বারুদ এর গন্ধ পাইনি , কিন্তু এক সুদীর্ঘ ইতিহাস যেন  শোনাতে চায়  কালের কণ্ঠে ঘটে যাওয়া কিছু অবশেষ । 


ময়াপুর ম্যাগাজিনের মানচিত্র
সেই সময় যে সমস্থ জাহাজ কলকাতা বন্দরে আসত তাঁরা সিগনাল ও অন্যান্য জরুরী প্রয়োজনে  জাহাজে বারুদ রাখত ।১৮৫৫ সালের আগে অবধি তাঁরা ১০০ পাউন্ড মানে প্রায় ৪৫ কিলো বারুদ নিয়ে কলকাতা বন্দর এলাকায় তাঁরা প্রবেশ করতে পারত পরে ১৮৫৫ সালের Act XXII অনুযায়ী ৫০ পাউন্ড বারুদ নিয়ে কলকাতা বন্দর এলাকায় প্রবেশের অনুমতি পায় । এর অতিরিক্ত বারুদ, গুলি তাঁদের রেখে আস্তে হত ময়াপুর ম্যাগাজিনে । ফিরে যাবার পথে আবার তাঁরা নিয়ে নিত  জমা রাখা বারুদ । একই ব্যাবস্থা ছিলও দেশী বিদেশী বারুদ আমদানিকারী দের জন্য।  জীবন , সম্পত্তি ও নিরাপদ বন্দর এর জন্যই এই ব্যাবস্থা ।


১৮৭১ সাল এর সেপ্টেম্বর মাস সবে ময়াপুর ম্যাগাজিন কলকাতা পোর্ট কমিশনার এর হাতে এসেছে ।  তৎকালীন বেঙ্গল গভর্নমেন্ট এর সেক্রেটারি C. Bernard জানান,  লেফটেনান্ট  গভর্নর  ময়াপুর ম্যাগাজিন এর পরিবর্তন  পরিমার্জন  এর নির্দেশ দিয়েছেন । এবং এও জানান হয় যে  বারুদ আমদানি কারীদের অতিরিক্ত বারুদ ময়াপুর ম্যাগাজিনে জমা রাখতে হবে ও তার জন্য ভাড়া নেওয়া  হবে । জমা থাকা বারুদ তিন বছরের বেশি দাবীহীন  অবস্থায় থাকলে তা নিলাম করে দেয়া হবে । যারা বারুদ আমদানি করবেন ও ম্যাগাজিনে বারুদ  জমা রাখবেন তাঁদের ২৫ পাউন্ড অবধি ১ আনা, ২৫ পাউন্ড থেকে ৫০ পাউন্ড অবধি ২ আনা ও ৫০ পাউন্ড এর বেশি হলে ৪ আনা ভাড়া দিতে হবে । যদিও এর আগে ডেলিভারি চার্জ ছাড়া কোন ভাড়া নেওয়া হত না।

১৮৭২ সাল । কলকাতা পোর্ট কমিশনার এর আনুষ্ঠানিক সূচনার  সবে  দুই এক বছর  হয়েছে । ঐ বছর  লেডি মেলভিল নামক একটি জাহাজ কলকাতা বন্দরে আগুনে পুরে যায় । অনুসন্ধান করলে দেখা যায়  ওতে  ৫০ পাউন্ড  বারুদ মজুদ  ছিল। তাতে জাহাজ  টিতে বিস্ফোরণ  ঘটতে  পারত ফলে  জীবন ও সম্পত্তির হানি ঘটতে  পারত । সেই ঘটনার পর, ঐ সালেই নতুন নিয়ম হয়, ৫ পাউন্ড এর বেশি বারুদ নিয়ে কলকাতা বন্দর এলাকায় ঢুকতে দেয়া হবে না । ফলে অতিরিক্ত বারুদ তাদের ময়াপুর ম্যাগাজিন এ জমা রাখতে হবে । বন্দরে আগত জাহাজ থেকে বারুদ ম্যাগাজিন এ  নিয়ে আসা ও দিয়ে আসার সুবিধার জন্য পোর্ট কমিশনার একটি বিশেষ ভাবে নির্মিত বারুদ বোট এর বাবস্থা করেন । এই বাবস্থাটি ছিল নিশুল্ক ।


 এদিকে ভাড়ার প্রবর্তন ও  তিন বছরের সময় সীমার নতুন নিয়মে ভারতীয় বারুদ আমদানিকারী রা খুব অসুবিধার মধ্যে পরেন । ১৮৭৩ সালে চন্দ্র কুমার মল্লিক এবং অন্যান্যরা পোর্ট কমিশনার এর কাছে একটি  আবেদন জমা দেন । তাতে তাঁরা বলেন যেহেতু আমদানি করা বারুদ  নিজেদের গুদামঘর এ রাখতে দেওয়া হয় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ বারুদ তাঁরা নিয়ে আসতে পারেন, বাকি বারুদ তাদের ময়াপুর ম্যাগাজিন এ রেখে আসতে হয়, তাই ময়াপুর ম্যাগাজিন  ব্যবহার এর  জন্য ভাড়া নেওয়ার বিরুদ্ধে তাঁরা আপত্তি যানাচ্ছেন । আবার তাঁরা অনেক সময় বিশেষ ধরনের বারুদ আমদানি করেন যেটা ম্যাগাজিন এ অনেক সময় ৭ বছরের এর বেশি সময় ধরে পরে থাকে । এর পর  পোর্ট কমিশনার ভাড়ার   সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত রাখলেও বিশেষ বিশেষ  পরিস্থিতিতে  ৩ বছরের সময়সীমা  বাড়াতে সম্মত হন ।  

( চলবে )

Moyapur Magazine on Google Map.
Inflrmation Sources : 
O’Malley, L.S.S. - Bengal District Gazetteers: 24-Parganas (Bengal Secretariat Book Depot, 1914)
Documents of KoPT.

More Stories on Moyapur Semaphore :
Achipur Barood Ghar
Forgotten History: The Gunpowder Magazine of Achipur